Trade License

ট্রেড লাইসেন্সের নবায়ন ফি এর সাথে দিতে হবে তিন হাজার টাকা

তথ্যপ্রযুক্তি
ঢাকার মধ্যে দুই সিটি করপোরেশনের ক্ষুদ্র আকারে ব্যবসায়ীদের ট্রেড লাইসেন্স নবায়নে নির্ধারিত ফি ৫০০ টাকা মত হলেও উৎসে কর বাবদ এখন দিতে হয় তিন হাজার টাকা । একে অযৌক্তিক দাবি করেছে স্বয়ং দুই সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে এই কর থেকে ব্যবসায়ীদের নিস্তার দিতে অর্থমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মাননীয় মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস। সেই সাথে  ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলামও একমত পোষণ করেছেন তার কথার সঙ্গে।
জানতে চাইলে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকা দক্ষিণের মেয়রের এই সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছে। আমি এই প্রস্তাবিত দাবির সঙ্গে একমত। এই করের কারণে আমাদের সকল ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীগণ লাইসেন্স নবায়নে একবারেই আগ্রহ দেখাচ্ছে না। আমরাও রাজস্ব হারাচ্ছি। আর আমরা কেন NBR এর কাজ করে দেবো শুনি? যদি করেই দিতে হয় তবে সেই জায়গা থেকে একটা রাজস্ব আমাদেরকেও দেওয়া হোক।
বিগত ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য Trade License নবায়ন ফি বাড়াতে আয়কর অধ্যাদেশের ৫২ কে ধারায় পরিবর্তন আনা হয়েছে অর্থ বিলে। এতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে Trade License নবায়নের ক্ষেত্রে প্রতিটিতে প্রায় তিন হাজার টাকা উৎস কর দিতে হবে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য ঠিক একই কর ছিল ৫০০ টাকা।
এছাড়াও অন্য সিটি করপোরেশনভুক্ত এলাকা এবং পৌরসভার ক্ষেত্রে যে উৎসটি কর ছিল ৩০০ টাকা সেটাগুলোও বাড়িয়ে দুই হাজার টাকা মত করা হয়েছে। অন্য পৌরসভাগুলোতে Trade License নবায়নে ১০০ টাকার কর বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করার কথা বলা হয়েছিল।
মন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে DSCC মেয়র জানিয়েছেন, ডিএসসিসির রেকর্ডভুক্ত Trade License সংখ্যা প্রায় ২ লাখ ৩৩ হাজারটি (২৩ মে পর্যন্ত)। সম্প্রসারিত ১৮টি ওয়ার্ডের প্রতিষ্ঠানগুলো লাইসেন্সের আওতায় আসার কারণে এ সংখ্যা বাড়ছে। তথাপি এ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ মালিকদের আয় সীমিত।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, সিটি করপোরেশনকে Trade License নবায়ন করতে প্রতিটি লাইসেন্সের বিপরীতে অতিরিক্ত ৫০০ টাকা উৎস কর আদায় করা হয়েছে। সেটা বাড়িয়ে ৩ হাজার টাকা করা হয়েছে। তারওপর  নিয়ম অনুসারে নবায়ন ফিতে রয়েছে আরও ১৫ শতাংশ ভ্যাট।
তিনি আরও বলেন, অধিকাংশ ব্যবসায়ীগ ক্ষুদ্র পুঁজি নিয়ে ব্যবসা করছে। তাদের পক্ষে বাড়তি আরও ৩ হাজার টাকা পরিশোধ কষ্টকর হবে। এ কারণে অনেকেই Trade License নবায়ন করতেই আগ্রহী হচ্ছেন না বলে জানা যায়। এতে সিটি করপোরেশনের নিয়মিত Trade License ইস্যু ও নবায়ন কার্যক্রমও ব্যহত হচ্ছে বলে শোনা গিয়েছে। আদায় হচ্ছে না কাঙ্ক্ষিত লক্ষমাত্রার রাজস্ব। ৩ হাজার টাকার উৎস কর বাতিল করা হলে সিটি করপোরেশনের Trade License বাবদ রাজস্ব আদায় বাড়বে অনেকগুণ।
পাশাপাশি রাজস্ব বোর্ড যেন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পাওনা আদায় করে নেয়, সেটারও আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে DSCC রাজস্ব কর্মকর্তা শাহজাহান আলী বলেন, ‘এখানকার প্রায় অধিকাংশই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তিন হাজার টাকা অতিরিক্ত করের কথা শুনে অনেকেই লাইসেন্স নবায়ন করতে আসছেন না। যার কারণে আগে যে পরিমাণ রাজস্ব আদায় হতো, সেটাও এখন আর হচ্ছে না। এ জন্য মেয়র মহোদয় অর্থমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন বলে শুনেছি। এনবিআর থেকে এখনও কোনো উত্তর আসেনি।’
এ বিষয় নিয়ে এনবিআরের একজন সদস্য বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা প্রতি বছর শেষে রিটার্ন দাখিল করার সময় এ কর দেখাবেন। রিটার্নে সমন্বয়ও করতে পারবেন। অতিরিক্ত দিলে ফেরতও পাবেন।’
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি বলেন, ‘এমনিতেই করোনাকালে আমরা অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। তারওপর আবার ৫০০ টাকার লাইসেন্সের জন্য অতিরিক্ত তিন হাজার টাকা করের মুখে পড়ছেন ব্যবসায়ীরা। এটা খুব বেশি অমানবিক।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *