ড. ইউনূসের মামলায় সরকার কোনো পক্ষ নয়, লিগ্যাল এক্সপার্টদের নিয়ে আসার পরামর্শ

দিনকাল বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

 

শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মামলায় সরকার কোনো পক্ষ নয় বলে আবারও সাফ জানিয়েছে সরকার। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বঞ্চিত শ্রমিক-কর্মচারীরা ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। এদিকে বিচার পর্যবেক্ষণে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ দলকে লিগ্যাল এক্সপার্টদের নিয়ে আসার পরামর্শ দিয়েছেন কলকারখানা ও পরিদর্শন অধিদপ্তরের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

 

মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ১৪টি দেশের নন-রেসিডেন্ট রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনায় বসেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৪টি দেশের নন-রেসিডেন্ট রাষ্ট্রদূত, তারা মূলত নতুন সরকারকে অভিনন্দন জানাতে বাংলাদেশে এসেছে। সোমবার বঙ্গবন্ধুর সমাধিস্থলে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তারা।

 

পরে সাংবাদিকদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশের বিচার প্রক্রিয়া অত্যন্ত স্বচ্ছ। বাংলাদেশের বিচার প্রক্রিয়া স্বচ্ছ বলে ক্ষমতাসীন দলের অনেকেই বিচারের সম্মুখীন হয় ও জেলে যায়। ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে যে মামলা, সেখানে সরকার কোনো পক্ষ নয়। যেসব শ্রমিক কর্মচারী বঞ্চিত হয়েছে, তারাই তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। অত্যন্ত স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় বিচারটা হচ্ছে।’

 

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিচারের বিষয়ে গত ২৯ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট-এ বিজ্ঞাপন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটি ওয়াশিংটন পোস্টে বিজ্ঞাপন আকারে ছাপা হয়েছে, নিউজ আকারে নয়। আমাদের দেশের পত্রিকায় যেমন বিবৃতি দেওয়া হয়, সেভাবে নয়। এটি বিজ্ঞাপন আকারে দেওয়া হয়েছে। এটা একদম স্পষ্ট যে, লবিস্ট ফার্মের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন আকারে সেটি ছাপানো হয়েছে। এরকম বিজ্ঞাপন আগেও ছাপানো হয়েছে।’

 

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় উদ্বেগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলা চিঠি পাঠিয়েছেন নোবেল বিজয়ীসহ বিশ্বে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্বস্থানীয় ২৪২ ব্যক্তি। চিঠিতে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে দুটি মামলা পর্যালোচনার জন্য বাংলাদেশে একটি আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ দল পাঠানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

 

এপ্রসঙ্গে মামলার কলকারখানা ও পরিদর্শন অধিদপ্তরের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘যারা বিদেশ থেকে ড. ইউনূসের বিচার পর্যবেক্ষণে আসতে চান তাদের স্বাগত জানাই। তবে আমি বলবো, সঙ্গে লিগ্যাল এক্সপার্টদের নিয়ে আসুন। কারণ নোবেল বিজয়ীরা স্ব স্ব ক্ষেত্রে অনেক জ্ঞানী হলেও তারা বাংলাদেশের মানি লন্ডারিং আইন, শ্রম আইন সম্পর্কে জানেন না ‘

 

মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের তিনি আরও বলেন, ‘এখানে নোবেলজয়ীর বিচার হচ্ছে না, এখানে মানি লন্ডারিংয়ের বিচার হচ্ছে।’ চিঠিতে ড. ইউনূসের বিচার স্থগিতের আহ্বান বাংলাদেশে বিচার ব্যবস্থায় অযাচিত হস্তক্ষেপ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

 

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে করা মামলায় গত ১ জানুয়ারি ২০২৪ এ রায় দেন ঢাকার শ্রম আদালতের বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানা। ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে ওই মামলা করেন। মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *