নিজস্ব প্রতিবেদক
স্বচ্ছভাবে নির্বাচন ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন (অ্যাপ) তৈরি করেছে নির্বাচন কমিশন। এই অ্যাপের মাধ্যমে ভোটের কেন্দ্র, ভোটারের তথ্য, ভোটের কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফল সহ ভোট সম্পর্কিত সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে। বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘স্মার্ট ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট বিডি’ অ্যাপের উদ্বোধন করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
নির্বাচন কমিশন জানায়, এর মাধ্যমে বিভাগওয়ারী আসনগুলোর তথ্য, যেমন: মোট ভোটার, মোট আসন, আসনের প্রার্থী, প্রার্থীদের বিস্তারিত তথ্যও (হলফনামা, আয়কর সম্পর্কিত তথ্য, নির্বাচনী ব্যয় ও ব্যক্তিগত সম্পদের বিবরণী) থাকবে। অ্যাপল ও গুগল স্টোর থেকে অ্যাপটি নামিয়ে ব্যবহার করা যাবে। এরজন্য অ্যাপটিতে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর দিয়ে ঢুকতে হবে।
এ অ্যাপের মধ্য দিয়ে ভোটার নম্বর, ভোটকেন্দ্রের নাম ও ভৌগলিক অবস্থান সম্পর্কে পূর্ব ধারণা নিশ্চিতভাবে ভোটারকে সময়ের অপচয়, বিড়ম্বনা এবং হয়রানি থেকে রক্ষা করবে। ভোটার নম্বর জানা থাকার কারণে ভোটার তালিকায় সিরিয়াল নম্বর সহজে নির্ণয় হবে, এজন্য কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মীদের শরণাপন্ন হতে হবে না।
অ্যাপস- এর মাধ্যমে একজন ভোটার প্রার্থীদের তথ্যাবলী বিশ্লেষণ করে পছন্দসই প্রার্থী বেছে নিতে পারবেন।
ভোটার তার নির্বাচনী আসনে মোট ভোটার সংখ্যা জানতে পারবেন, যাতে করে চূড়ান্ত ফলাফলে ভোটসংখ্যা সংক্রান্ত কোনো বিভ্রান্তির অবকাশ থাকবে না।
তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত তথ্যের অবাধ প্রবাহ থাকার কারণে প্রার্থীরাও তাদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সচেতন হবেন বলে আশা করছে নির্বাচন কমিশন। সব মিলিয়ে নির্বাচন ব্যবস্থাপনা আরও সহজ, বিশ্বাসযোগ্য হবে বলে আশা করছে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান জানান, অ্যাপটির মাধ্যমে একজন ভোটার ঘরে বসে তার ভোটার নম্বর জানতে পারবেন। পাশাপাশি তার ভোটার এলাকা, নির্বাচনী আসন, ভোটকেন্দ্রের নাম জানা যাবে। এতে ভোটকেন্দ্রের ছবি, ভোটকেন্দ্রের ভৌগলিক অবস্থান ম্যাপসহ দেখা যাবে।
এর মাধ্যমে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর তথ্য জানা যাবে এবং সমসাময়িক তথ্যাবলী নোটিশ আকারে প্রদর্শিত হবে। অ্যাপের সাহায্যে প্রতি ২ ঘণ্টা অন্তর চলমান ভোটিং কার্যক্রমের তথ্য ও কত ভোট পড়ল, সেই তথ্যও থাকবে বলে জানান এই নির্বাচন কমিশনার।
আহসান হাবিব খান জানান, নির্বাচনী ফলাফলের সার্বিক অবস্থা, যেমন গণনা এবং ফলাফল বিশ্লেষণ নামে অপশনের মাধ্যমে একজন ভোটার পূর্বতন নির্বাচন এবং বর্তমান নির্বাচনের ফলাফলের গ্রাফিক্যাল বর্ণনাও পাবেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, জনগণের কাছে নির্বাচন নিয়ে যেন বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি হয় ও আস্থার ঘাটতি না ঘটে, সেজন্য নির্বাচন কমিশন এই অ্যাপ তৈরি করেছে।
সিইসি বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রে পোলিং চলাকালে দুই ঘণ্টা পরপর যে তথ্য আমাদের প্রতিটি ইলেকশন সেন্টারে পাওয়া যাবে, তা আপলোড করা হবে। আপলোড করা হলে যেকোনো নাগরিক পৃথিবীর যেকোনো জায়গা দেশে বা বিদেশ থেকে থেকে অ্যাকসেস নিয়ে জানতে পারবে ভোটের পরিমাণটা কীভাবে হচ্ছে।
তিনি বলেন, এই অ্যাপ চালু করার উদ্দেশ্য হচ্ছে, ভোটকেন্দ্রে কোনো রকম অনিয়ম বা কারচুপি হচ্ছে কি না, তা জানা।
স্মার্ট ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট বিডি অ্যাপের সাহায্যে একজন ভোটার তার এনআইডি ও জন্ম তারিখ দিয়ে প্রবেশ করে নিজ ভোটকেন্দ্রের অবস্থান, ছবি, ম্যাপ, দূরত্ব সম্পর্কে জানতে পারবেন। এছাড়া, নির্বাচনী বিভিন্ন তথ্যের পাশাপাশি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর তথ্য, প্রার্থীদের তথ্য এবং নির্বাচনী ফলাফল সম্পর্কে জানা যাবে। স্মার্ট মোবাইল ফোনে ডাউনলোড ও ইন্সটল করার জন্য স্মার্ট ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট বিডি অ্যাপটি গুগল প্লে স্টোর (অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের জন্য) এবং অ্যাপ স্টোরে (আইফোনের জন্য) পাওয়া যাচ্ছে।