এখন হেমন্ত কাল। আমাদের দেশে হেমন্তের প্রভাবে বাতাসে শীতলতা বাড়তে শুরু করেছে। সাথে সাথে বাতাস আর্দ্রতা হারাচ্ছে। যে কারণে ত্বক ও চুলও হয়ে উঠছে রুক্ষ। তবে পর্যাপ্ত পুষ্টি ও আর্দ্রতার দিয়ে চুলের রুক্ষতাকে সহজেই বশে আনা সম্ভব। আমাদের হাতের কাছেই রয়েছে এমন প্রচুর উপাদান, যা রুক্ষতা নিয়ন্ত্রণ করতে কার্যকর।
কৃতিম বা কেমিক্যালী প্রসাধনীর তুলনায় প্রাকৃতিক উপাদান চুলের জন্য উত্তম। তবে , প্রসাধনীর তুলনায় প্রাকৃতিক উপাদান কিছুটা ধীরগতিতে কাজ করে। তাই দু–একবার ব্যবহার করেই সম্পূর্ণ সমাধান আশা করা ঠিক হবে না। প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহারের সঙ্গে প্রয়োজন হয় বাড়তি নিয়ম ও যত্ন। নিয়মিত যত্ন নিলে চুল আরও কোমল ও নরম হয়ে উঠবে।
চুলের প্রাকৃতিক কন্ডিশনারঃ
কলা প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে দারুণ, যা নিমেষেই দূর করে রুক্ষতা। একটা পাকা কলার সঙ্গে দুই চা-চামচ মধু ও অর্ধেক কাপ নারকেল অথবা আমন্ড তেল মিশিয়ে চুলে ২০ থেকে ২৫ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে নিতে হবে।
চুল ভেঙে যাওয়া থেকে চুল রক্ষা করাঃ
রুক্ষতার কারণে চুল ভেঙেও যেতে পারে। এর থেকে রেহাই পেতে ডিম দারুণ উপকারী। অপর দিকে চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে অলিভ অয়েল। এবার এই দুই উপাদান একসঙ্গে মেশালেই তৈরি হবে রুক্ষ চুলের জন্য আদর্শ প্যাক। এই মিশ্রণ মাথার তালুসহ পুরো চুলে ভালোভাবে লাগিয়ে রাখতে হবে ৪০ মিনিট। এরপর শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার দিয়ে চুল ধুয়ে নিতে হবে।
চুলের ভিটামিনঃ
অ্যাভোকাডো চুলের জন্যে এটি বিশেষ উপকারী। তবে অ্যাভোকাডো আমাদের দেশে খুব একটা সহজলভ্য নয়। এতে রয়েছে ভিটামিন বি ও ই–এর মতো প্রয়োজনীয় উপাদান, যা চুলের রুক্ষতা দূর করে।
চুলের উজ্জ্বলতা রক্ষা করাঃ
মেয়োনেজ বাসার ফ্রিজে থাকা অতি পরিচিত। মেয়োনেজও চুলের রুক্ষতায় ভীষণ উপকারী।অর্ধেক কাপ মেয়োনেজ, দুই টেবিল–চামচ অলিভ অয়েল এবং চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী দু–একটা ডিম একসঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে। মিশ্রণটি চুলে লাগিয়ে শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে অন্তত আধঘণ্টা। পরে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এই মাস্ক শুধু রুক্ষতা দূর করে না বরং চুলের উজ্জ্বলতাও বাড়ায়।
চুলের যত্নে অয়েল ম্যাসাজঃ
চুলের যত্নে হট অয়েল ম্যাসাজ বা হালকা গরম তেলের মালিশ বেশ পরিচিত একটি বিষয়। চুলের রুক্ষতা দূর করতেও এটি দারুণ কার্যকর। ভালো মানের নারকেল তেল এভাবে ব্যবহার করলে রুক্ষতা অনেকটাই কমে। তবে একেকজনের চুলে একেক ধরনের তেল বেশি কার্যকর। সেই অনুযায়ী একাধিক তেল মিশিয়েও চুলে সঠিকভাবে ম্যাসাজ করলে শুধু চুল নয় মাথার ত্বকের জন্যও ভালো ফল পাওয়া যায়।
আবার চুলের ধরন অনুযায়ীও তেল বেছে নেওয়া যায়। যেমন যাঁদের চুল পাতলা, তারা হালকা তেল, যেমন জোজোবা বা আমন্ড তেল বেছে নিতে পারেন। আবার ঘন চুলের ক্ষেত্রে নারকেল তেল বা আর্গান তেল বেছে নেওয়া যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, তেল খুব বেশি গরম করলে এর উপকারী উপাদান নষ্ট হতে পারে। তাই হালকা গরম তেল মাথার তালুতে ১০-১৫ মিনিট ধরে হালকাভাবে মালিশ করতে হবে। এরপর গরম পানিতে তোয়ালে ডুবিয়ে অতিরিক্ত পানি ফেলে দিয়ে চুলে বেঁধে রাখতে হবে। আধঘণ্টা পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।