গতকাল শনিবার এক বিবৃতিতে সৌদি সরকার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে এ বছর নিজ দেশের ও বাইরের মিলিয়ে মোট ১০ লাখ মুসলিমকে পবিত্র হজব্রত পালন করতে পারবে। তবে করোনার ঝুঁকির কারণে হজ করার সুযোগ পেতে দুটি শর্ত পালন করতে হবে। শর্ত সমূহ হলঃ
১। বয়স যাঁদের ৬৫ বছরের নিচে শুধু তাঁরাই এবার হজ করতে পারবেন।
২। টিকাসংক্রান্ত শর্ত পালন করতে হবে। দুই ডোজ টিকা নিতে হবে এবং সফরের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে করানো কভিড-১৯ পিসিআর টেস্টের ‘নেগেটিভ’ ফলাফল জমা দিতে হবে।
সৌদি আরবের বাইরে থেকে হজে যাওয়া ব্যক্তিদের অবশ্যই হজ ভিসা নিয়ে যেতে হবে। দুই বছরের বেশি সময় ধরে কভিড-১৯ মহামারির নিষেধাজ্ঞার মুখে সীমিতসংখ্যক অংশগ্রহণকারী নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে হজ। ২০১৯ সালেও গোটা বিশ্ব থেকে প্রায় ২৫ লাখ মানুষ অংশ নিয়েছিলেন হজে। কিন্তু ২০২০ সালে কভিড মহামারির মুখে মাত্র এক হাজার জনকে হজের অনুমতি দেয় সৌদি কর্তৃপক্ষ। এর পরের বছর ২০২১ সালে হজের অনুমতি দেওয়া হয় শুধু পরিপূর্ণ ডোজ টিকা নেওয়া ৬০ হাজার সৌদি নাগরিককে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সৌদি সরকারের এ ঘোষণা সাধুবাদ কুড়িয়েছে। তবে বয়সের সীমাবদ্ধতা নিয়ে টুইটারে প্রশ্ন তুলেছেন কিছু ব্যবহারকারী। এ রকমই একজন লিখেছেন, ‘কত ভালো একটি খবর, কিন্তু বয়সের সীমাবদ্ধতা আরোপ অনেক হজপ্রত্যাশীর জন্য দুঃখজনক। ’
হজে যেতে না পারার বিষয়টি সৌদি আরবের বাইরের দেশগুলোর অনেক মুসলিমের জন্যই কষ্টের কারণ ছিল। এ প্রসঙ্গে কায়রোর বাসিন্দা মোহামেদ তামের বলেন, ‘আমরা গত দুই বছর স্বল্প হজযাত্রীর বিষয়টি নিয়ে অনেক দুঃখ পেয়েছি। আমি খুব খুশি যে হজ কিছুটা হলেও পূর্ণ পরিসরে ফিরেছে। ’
তবে সন্তুষ্টি প্রকাশের পাশাপাশি হোটেল ও ফ্লাইটের খরচ বেড়ে যেতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন মিসরীয় তামের।
অনেকে আবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সময়, অর্থ ও শ্রম ব্যয় করে সৌদি আরব পৌঁছানোর পর কভিড পজিটিভ ফলাফলের কারণে সমস্যা হতে পারে বলে। সৌদি সরকারের জন্য হজের আয়োজন এক ধরনের মর্যাদার প্রশ্ন। এ ছাড়া মহামারির আগে সৌদি আরবের একটা বড় আয়ের উৎস ছিল হজযাত্রী। অর্থের অঙ্কে তা বছরে প্রায় এক হাজার ২০০ কোটি ডলার।
সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, দেশটিতে এখন পর্যন্ত সাত লাখ ৫১ হাজার কভিড-১৯ সংক্রমণ পাওয়া গেছে। অন্যদিকে এতে মারা গেছে ৯ হাজার ৫৫ জন। মার্চের শুরুতে সামাজিক দূরত্বসহ বেশির ভাগ কভিড নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সৌদি আরব সরকার।
সূত্র : এএফপি