গতকাল সোমবার রাত নয়টায় প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) । মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।
গতকাল সোমবার রাত নয়টায় রাজশাহী শহরে নিজ বাসভবনে তাঁর মৃত্যু হয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক মলয় ভৌমিক এ তথ্য জানিয়েছেন। হাসান আজিজুল হক ১৯৩৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বর্তমান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার যবগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা মোহাম্মদ দোয়া বখশ্ ও মাতা জোহরা খাতুন। জীবনের অধিকাংশ সময় হাসান আজিজুল হক রাজশাহীতে কাটিয়েছেন।
৮২ বছর বয়সী হাসান আজিজুল হক বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। গত ২১ আগস্ট এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে ঢাকায় আনা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) দুই সপ্তাহের বেশি সময় চিকিৎসা নেন তিনি। কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর ৯ সেপ্টেম্বর তাঁকে রাজশাহীতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।
গত ১৬ আগস্ট হাসান আজিজুল হকের ছেলে ইমতিয়াজ হাসানের একটি ফেসবুক পোস্টে তাঁর বাবার অসুস্থতার কথা প্রথম জানা যায়। সে সময় পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছিল, হাসান আজিজুল হক অসুস্থ হয়ে প্রায় এক মাস বাসায় ছিলেন। করোনার কারণে বাসায় রেখেই চলছিল তাঁর চিকিৎসা।
বার্ধক্যজনিত সমস্যা ছাড়াও আগে থেকেই তাঁর হার্টে সমস্যা, ডায়াবেটিস ছিল। তাঁর শরীরে লবণের ঘাটতিও ছিল। করোনার কারণে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়নি। চিকিৎসকের পরামর্শমতো বাড়িতেই তাঁর চিকিৎসা চলছিল। তিনি একবার পড়ে গিয়ে কোমরে ব্যথা পেয়েছিলেন। তিনি ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়ছিলেন। সেই পরিস্থিতিতে তাঁকে ঢাকায় আনা হয়েছিল।
অধ্যাপক মলয় ভৌমিক জানিয়েছেন, সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় হাসান আজিজুল হকের মরদেহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে নেওয়া হবে। পরে বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে।
হাসান আজিজুল হক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার পাশাপাশি লেখালেখি করে গেছেন। তিনি একাধারে গল্প, উপন্যাস ও প্রবন্ধ লিখেছেন। বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এই কথাসাহিত্যিকের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।