আয়কর খাতে উৎস কর ব্যবস্থাপনায় অটোমেশন বা স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম যোগ করল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এখন থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাটা হবে উৎস কর। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় এনবিআর উদ্ভাবিত ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ই-টিডিএস উদ্বোধন করেন মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি) মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী।
আলোচনায় বক্তারা বলেন, উৎস কর ব্যবস্থাপনায় আর্থিক শৃঙ্খলা জোরদার করতে ও করসংক্রান্ত মামলার জট কমাতে ই-টিডিএস সিস্টেম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই পদ্ধতি চালু হওয়ায় রাজস্ব ফাঁকি কমবে; বাড়বে আদায়। বর্তমানে সরকার ৫৩টি খাত থেকে উৎস কর কর্তন করে, যা ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে হয়।
ই-টিডিএস চালু হওয়ায় পদ্ধতিটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে উৎস থেকে কর কাটবে। ফলে এটি জাতীয় পর্যায়ে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। যিনি কর দেবেন তিনি এই ই-টিডিএস সিস্টেমে লগইন করে তাঁর যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করে ই-চালানের মাধ্যমে কর পরিশোধ করতে পারবেন। এতে আয়কর কর্তৃপক্ষ সহজেই মনিটরিং করতে সক্ষম হবে।
বর্তমানে উৎস কর মোট আয়করের ৬০ শতাংশ। মুসলিম চৌধুরী এই সংস্কারকে ‘যুগান্তকারী’ উল্লেখ করে বলেন, অটোমেশন কার্যকর হয়লে উৎস কর আদায় বেড়ে ৮৫ শতাংশ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।’ এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, ‘আমি যখন এনবিআরের দায়িত্ব নিই, তখন এই সংস্থা ডিজিটাইজেশনে এত উন্নত ছিল না। বর্তমানে অটোমেশন সিস্টেম করতে সক্ষম হয়েছে এনবিআর।
তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের রাজস্বের ৮৬ শতাংশ আহরণ করে এনবিআর। কারণ এনবিআরের দায়িত্ব রাষ্ট্রে বিভিন্ন খাত থেকে কর তুলে সেগুলো সরকারকে প্রদান করা। অটোমেশন পদ্ধতি এ ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনবে।’
অর্থ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আবদুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘ দেশে দুই কোটি মানুষের কর দেওয়ার সক্ষমতা আছে। সেখানে কর দেয় মাত্র ১০ শতাংশ। কর বাড়ানোর তাগিদ দেওয়া হচ্ছে না। করের হার কমিয়ে দেওয়া যেতে পারে, এতে বেশিসংখ্যক মানুষ কর দেবে। ফলে রাজস্ব আয় আগের তুলনায় বাড়বে।’ তিনি আরো বলেন, ‘উৎস করের মতো যদি আয়কর, মূল্য সংযোজন কর (মূসক) এবং কাস্টমস শুল্ক ব্যবস্থায় অটোমেশন করা যায় তাহলে বছরে কয়েক হাজার কোটি টাকার রাজস্ব সাশ্রয় হবে।