জানা যায়, খুলনা রেলওয়ে স্টেশনে টিকিট কালোবাজারি অভিযোগ দীর্ঘদিনের। সর্বশেষ ২ মে জেলা প্রশাসনের অভিযানে রেলওয়ে কর্মী-বহিরাগতদের একটি সিন্ডিকেট চিহ্নিত হয়। যাত্রীরা অভিযোগ করেন, বিশেষ করে ঈদের সময় লাইনে দাঁড়িয়েও টিকিট পাচ্ছেন না। রেলের টিকিট কালোবাজারী করে দ্বিগুণ মূল্যে বিক্রি করা হয়। অভিযানে সিন্ডিকেটে জড়িত তিনজন রেলকর্মীকে মুচলেকা ও দুই বহিরাগতকে জরিমানা করা হয়। এর আগে দুদকের অভিযানেও সার্ভারে ভিআইপিদের নামে টিকিট অটো ব্লক দেখিয়ে কালোবাজারে বিক্রির প্রমাণ পাওয়া যায়। স্টেশন মাস্টার মানিকচন্দ্র সরকার জানান, সিন্ডিকেটটি বিভিন্ন ভিআইপি ও রাজনীতিবিদদের নামে ভুয়া চাহিদা দেখিয়ে টিকিট নেয়। পরে তা উচ্চমূল্যে বাইরে বিক্রি করে। টিকিট না দিলে বাইরের লোকজন ডেকে এনে দায়িত্বরতদের হেনস্তা করা হয়। তিনি বলেন, সরকারি নির্দেশনা ভিআইপিদের নামে টিকিট বরাদ্দ বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু এই সিন্ডিকেটের টিকিটের চাহিদা এত বৃদ্ধি পেয়েছে যে, টিকিট না দিলে তারা স্টেশনে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাচ্ছে। টিকিট না দেওয়ায় তাকে মোবাইলে হুমকি দেওয়া হয়েছে। তিনি বিষয়টি এরই মধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেছেন।
সিন্ডিকেটে জড়িত দুই সহকারী স্টেশন মাস্টারসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে রেলওয়ে থানায় জিডি করেছেন স্টেশন মাস্টার মানিকচন্দ্র সরকার। ১৬ মে খুলনা রেলওয়ে থানায় জিডি করা হয়। জিডি নম্বর ৪৮৪। এতে বলা হয়, সহকারী স্টেশন মাস্টার আশিক আহম্মেদ ও জাকির হোসেন, শ্রমিক নেতা (টিএক্সআর) বায়তুল ইসলাম, তোতা মিয়া ও জাফর মিয়া সরাসরি টিকিট কালোবাজারিতে জড়িত। এর মধ্যে বায়তুল ইসলামের বিরুদ্ধে রাজনীতিবিদদের নামে ভুয়া টিকিট বরাদ্দ নেওয়ার তথ্য-প্রমাণ মিলেছে।
এদিকে খুলনা রেলওয়ের সহকারী স্টেশন মাস্টার আশিক আহম্মেদ জানান, গত ১১ মে স্টেশনের ডায়মন্ড ও মিডিল পয়েন্টে দায়িত্বপালনকারীদের জন্য দুটি মোবাইল ফোন কিনে দিতে বলা হয়। এ নিয়ে স্টেশন মাস্টারের সঙ্গে তাদের বাগবিতন্ডা হয়েছে। তিনি বলেন, রেলস্টেশনে বিভিন্ন বাতি জ্বালানের জন্য দীর্ঘদিন ধরে মাসিক বরাদ্দ দেওয়া হয়। এখন ডিজিটাল লাইট হওয়ায় তেলের টাকা লাগে না। এ কারণে ওই টাকা থেকে মোবাইল কিনে দিতে বলা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের নামে মিথ্যা টিকিট সিন্ডিকেটের অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
সূত্র: বিডিপ্রতিদিন